সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
স্তন্য দান কখন করা উচিত, কিভাবে করা উচিত ইত্যাদি নিয়ে প্রচলিত রয়েছে বহু ভুল ধারণা। এ লেখায় দেয়া ১৩টি বিষয় সব মাকেই জানা উচিত, যা তাদের ভুল ধারণাগুলো দূর করতে সহায়তা করবে। এক প্রতিবেদনে বিয়য়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
১. স্তন্যদানে শেখার কিছু নেইঃ অনেকেই মায়ের দুধ প্রাকৃতিকভাবেই আসে এবং এক্ষেত্রে শেখার কিছু নেই বলে মনে করেন। যদিও স্তন্যদান প্রাকৃতিকভাবে এলেও এতে অনেক বিষয় আছে যা মায়েদের শিখে নিতে হয়। এজন্য অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া হলে এতে উপকার পাওয়া যাবে।
২. সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুরা দুধ পানের জন্য খুব ক্লান্ত থাকেঃ অনেক নারীই মনে করেন সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু ঘুমিয়ে থাকলে তাকে ঘুমাতে দেয়া উচিত। যদিও এ ধারণা সঠিক নয়। বাস্তবে অবস্থাভেদে প্রতি এক থেকে তিন ঘন্টা অন্তর শিশুকে দুগ্ধ পান করাতে হবে। এ সময় শিশু ঘুমিয়ে থাকলেও খাওয়ানোর জন্য উঠিয়ে নিতে হবে।
৩. মায়ের দুধ সরবরাহ কমঃ কোনো শিশুর সব সময় দুধ পান করতে চাওয়ার অর্থ এটা নয় যে, মায়ের দুধ কম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়ের দেহ পর্যাপ্ত দুধ উৎপাদন করে এবং শিশুকে বোতলের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে শিশুর ওজনের পরিবর্তন পরিমাপ করেই কেবল পার্থক্যটা বোঝা যেতে পারে।
৪. স্তন থেকে দুধ পান করানো কষ্টকরঃ অনেক নতুন মা স্তন্যদুধ পান করানো কষ্টকর বলে মনে করেন। যদিও এটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্য নয় বরং তার বিপরিতটাই সত্য।
৬. শিশুর রুটিন তৈরি করতে হবেঃ শিশুর নিজস্ব রুটিন থাকলেও সে রুটিন অন্যদের সঙ্গে মিলবে না। তাই খাওয়া-খেলার সে রুটিন শিশুর মতো করেই পালন করতে দিতে হবে।
৭. স্তন ফুলে গেলে গরম সেক দিতে হবেঃ শিশুকে স্তন দানকারী মায়ের কোনো সংক্রমণ বা অনুরূপ কারণে স্তন ফুলে যেতে পারে এক্ষেত্রে অনেকেই তাকে গরম সেক দিতে বলতে পারেন। যদিও ঠাণ্ডা শেক এক্ষেত্রে ফুলা কমাতে এবং দুধ নিঃস্বরণ স্বাভাবিক করতে সহায়তা করবে।
৮. বাইরের খাবারে পেটে গ্যাস সৃষ্টিঃ শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে বাইরের খাবার খাওয়াতে হয়। কিন্তু অনেক মা মনে করেন এসব খাবারে শিশুর পেটে গ্যাস হয়। যদিও বিষয়টি সঠিক নয়।
৯. শিশুর দুগ্ধপানে মায়ের ওজন কমেঃ স্তন্য দানকারী মা যদি স্বাভাবিক ভাবে পর্যাপ্ত খাবার খায় তাহলে তার ওজন কমবে না।
১০. স্তন্যদান জন্মনিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ অনেকেই মনে করেন শিশুকে স্তন্যদান করা হলে সে সময় মায়ের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কমে। যদিও বাস্তবে এমনটা দেখা যায় না।
১১. স্তন্যদানে স্তনের আকার নষ্ট হয়ঃ অনেকেরই ধারণা শিশু মায়ের দুধ পান করলে এতে মায়ের স্তনের আকার নষ্ট হয়। যদিও এটি পুরোপুরি সত্য নয় এ কারণে যে, স্তনের আকার নষ্ট হয় গর্ভ ধারণসহ বেশ কিছু কারণে।
১২. অস্ত্রোপচার হলে স্তন্যদান করা যাবে নাঃ অনেকেরই ধারণা মায়ের কোনো অস্ত্রোপচার (অপারেশন/সিজার) করা হলে শিশুকে স্তন্যদান করা যাবে না। যদিও এটি ভুল ধারণা। স্বাভাবিকভাবে কোনো অবস্থাতেই স্তন্যদান বন্ধ করা যাবে না।
১৩. স্তন্যদানের সময় পান করা নয়ঃ অনেকেরই ধারণা রয়েছে শিশুকে স্তন্যদানের সময় মা কোনো পানীয় পান করতে পারবেন না। যদিও এটি ভুল ধারণা।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।